ব্লগার হত্যাকান্ডে কারা লাভবান হচ্ছে? - ডক্টর তুহিন মালিক
ব্লগার হত্যাকান্ডে কারা লাভবান হচ্ছে? - ডক্টর তুহিন মালিক |
সুত্র : amarbangladesh-online.com
লেখক : ডক্টর
তুহিন মালিক, সুপ্রিম কোর্টের
আইনজ্ঞ ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ।
ই-মেইল :
drtuhinmalik@hotmail.com, রবিবার, ৯ই আগষ্ট, ২০১৫
Muktobak24:
১. যেদেশে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ফেইসবুক-টুইটারে কটুক্তি করলেই নিমেষে তাদের
সনাক্ত করে দ্রুতগতিতে আটক
করে শাস্তি দেয়া সম্ভব,
সেখানে ফেইসবুক-টুইটার-ইমেইলে ব্লগার
হত্যার দায় স্বীকার করলেও
বার্তাপ্রেরককে আজপর্যন্ত সনাক্ত করা যায়
না কেন?
২.
প্রতিনিয়ত টেলিফোন-মোবাইল এমনকি হ্যাক-অযোগ্য ভাইবার প্রযুক্তিকেও
আমরা রেকর্ড করতে সক্ষম
হলেও, আজপর্যš,কোন ব্লগারের হুমকীদাতাকে
আমরা ধরতে পারি নাই
কেন?
৩.
এফবিআই-এর মত বিশ্বখ্যাত
চৌকশ বাহিনী পর্যন্ত ব্লগার
হত্যাকান্ডের কোন ক্ল্যু খুঁজে
পেল না কেন?
৪.
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির মত লোকে-লোকারন্য
’জঙ্গীমুক্ত এলাকায়’ হাজারো মানুষের সামনে
ব্লগারকে প্রকাশ্যে কোপানো হলো, অথচ
ঘাতকদের ধরা তো দুরের
কথা একটা কেউ তাদের
চিনতে পারলোনা কেন?
৫.
ব্লগার অভিজিৎ হত্যার পর
প্রধানমন্ত্রী তনয় সজীব ওয়াজেদ
জয় কেন ব্লগার হত্যার
বিচারের প্রশ্নে ’চুপ থাকার নীতি’-কে সমর্থন করলেন?
৬.
গতকাল হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান
ঐক্য পরিষদ সংবাদ সম্মেলন
করে জয়বাংলা শ্লোগানে মন্ত্রী-এমপি-প্রশাসন সংখ্যালঘুদের
সম্পত্তি দখল করছে দাবী
করে লিখিত বক্তব্যে দেবার
২৪ ঘন্টার মধ্যেই কেন
নীলয়কে মরতে হলো? এবিষয়ে
সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত প্রকাশ্যেই
সরকারকে দায়ী করার কয়েক
ঘন্টার মধ্যেই কেন প্রান
দিতে হলো নীলয়কে?
৭.
ব্লগার নীলয় হত্যার তিনমাস
আগেই ভারতীয় পত্রিকা তার
মৃত্যু নিয়ে আগাম অনুমান
করলো কিভাবে?
৮.
এই কয়দিন আগেই রমযানে
রোজা রেখে ফেইসবুকে ষ্ট্যাটাস
দিয়েছিল নীলয়, অথচ তার
ফেইসবুক লেখালেখির বিরোধীতাকারীরা কেন প্রায় একমাসেও
ইসলাম ধর্মের অন্যতম প্রধান
একটি বিধান পালনকারীর ফেইসবুক
একাউন্টটি একবারও খুলে দেখলো
না?
৯.
ব্লগার নীলয় তার হত্যাকান্ডের
কদিন আগেই জীবনের নিরাপত্তা
চেয়ে পুলিশের কাছে গেলেও পুলিশ
তাকে নিরাপত্তা না দিয়ে বিদেশে
চলে যেতে বলেছিল কেন?
১০.
নীলয় হত্যার সময় ঘাতকরা
কেন আল্লাহু আকবার ধ্বনী দিয়েছিল?
যুবলীগ নেতা মিল্কি হত্যার
সময় ঘাতক আরেক যুবলীগ
নেতাকে পাঞ্জাবী-পায়জামা-টুপি পরে গুলি
করতে দেখা গিয়েছিল ভিডিও
ফুটেজে!
১১.
নীলয় হত্যায় একজনের মুখে
দাড়ি ছিল অথচ আল
কায়েদার সবারই তো দাড়ি-টুপি-জুব্বা থাকারই
কথা! আর ইমরান সরকারের
মুখেওতো দাড়ি আছে!
১২.
আসলে যুদ্ধাপরাধী ইস্যু এখন শেষের
দিকে। বিরোধী
দলেরও আন্দোলন করার সম্ভাবনা ক্ষীন। পেট্রোল
বোমা-আগুন সন্ত্রাসের বুলি
আওড়িয়েও এখন আর কোন
কাজ হচ্ছেনা। আত্মঘাতি
বোমা হামলা করে নৈরাজ্য
সৃষ্টি করার প্রপাগান্ডাও এখন
মানুষ ধরে ফেলেছে।
ঢিলেঢালা শাহবাগ আন্দোলন এখন
আর সরকারের কোন কাজে আসে
না। বিএনপি
এখন সব ছাড় দিয়েও
মধ্যবর্তী নির্বাচন চাচ্ছে। টিকে
থাকতে হলে দেশকে একটি
’জঙ্গী’, ’ব্যর্থ’ বা ’তালেবানী’ রাষ্ট্র
হিসাবে প্রমান করা ছাড়া
গদি রক্ষা কঠিন হয়ে
দাড়িয়েছে। প্রয়োজনে
আরো ব্লগারের লাশ দরকার হবে। তখন
আর বিনাভোটে বা একতরফা নির্বাচনেরও
কোন প্রয়োজন হবে না।
১৩.
ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী কোন
মানুষই অন্য ধর্মের কাউকে
কখনও হত্যা করতে পারে
না। অন্য
ধর্মে বিশ্বাসীরা তাদের র্ধম ছাড়া
অন্যের বিশ্বাসকে মিথ্যা প্রমান করতে
চাইবেই। এটাই
স্বাভাবিক। আপনি
যুক্তি, তর্ক, প্রমান দিয়ে
অন্যের ভ্রান্ত যুক্তিকে খন্ডান। আপনি
সফল হলে সেই বির্ধমী
হয়তো আপনার সত্য ধর্মে
বিশ্বাস আনবে। এটাই
আমার আল্লাহর নির্দেশ ও আমার রসুলের
সুন্নাহ। আপনার
মতের বিরুদ্ধাচারন করলেই যে তাকে
হত্যা করতে হবে, এটা
আপনি কোথায় পেলেন? তাহলে
তো মক্কায় আল্লাহর রসুলের
বিরুদ্ধাচারনকারী কোন অমুসলিমই বেচে
থাকতো না। অথচ
আমার নবী ঈহুদীদের বাসায়
পর্যন্ত দাওয়াত খেয়েছেন।
আমার রসুল কঠিনভাবে হুশিয়ারী
দিয়ে বলেছেল যে, স্বয়ং
তিনি নিজে কেয়ামতের দিন
আল্লাহর কাছে নালিশ করে
বিচার চাইবেন তাদের বিরুদ্ধে
যারা সংখ্যালঘুদের কষ্ট দেয় কিংবা
তাদের আঘাত করে কিংবা
তাদের সম্পত্তি হরনের চেষ্টা করে।
১৪.
এ কোন অপ-রাজনীতির
খেলায় আমরা লিপ্ত হয়ে
পড়েছি। এভাবে
চললে তো যে লক্ষ
প্রানের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা
চরম হুমকীর মুখে পড়বে। সামাজ্র্যবাদী
শক্তির দাসত্বের বলি দিয়ে নিজেদের
মধ্যে এই হানাহানি বন্ধ
করতেই হবে। আমাদের
সংখ্যালঘুদের এভাবে আর বলির
পাঠা বানাতে দেয়া যাবে
না।
লেখক
: ডক্টর তুহিন মালিক,সুপ্রিম
কোর্টের আইনজ্ঞ ও সংবিধান
বিশেষজ্ঞ।
ই-মেইল :
drtuhinmalik@hotmail.com
Comments
Post a Comment