মোদীর ধমকে নড়েচড়ে বসছেন হাসিনা, যেকোন সময় গণভবন ত্যাগ

মোদীর ধমকে নড়েচড়ে বসছেন হাসিনা, যেকোন সময় গণভবন ত্যাগ

muktobak24: ঢাকা, সোমবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০১৫

তথ্য সুত্র ; http://www.newsbd7.com

নিউজবিডিসেভেন এক্সক্লুসিভ: অবৈধ সরকারের স্বঘোষিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মসনদ এখন তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ার অপেক্ষায়। আর সেটা জেনেও গেছে শেখ হাসিনা। বিশেষ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ধমক ও সেনাপ্রধান ইকবাল করিম ভূইয়াঁর আল্টিমেটামে হাসিনা এখন সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। যেকোন সময় তাকে গণভবন ছাড়তে হতে পারে। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের শেষ ডেটলাইন ১৫ ফেব্রুয়ারি।

প্রধানমন্ত্রীর এক উপদেষ্টা জানান, বিএনপির গুলশান অফিসের বিদ্যুত বন্ধ করার খবরটি বাংলাদেশের মিডিয়া ও ভারতের মিডিয়ায় জোরেশোরে প্রচার হলে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে ফোন করেন। খালেদা জিয়ার সবশেষ পরিস্থিতি সম্বন্ধে বিস্তারিত অবহিত হয়ে এ বিষয়ে ভারতের পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। এরপর পরই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন করেন। মোদী শেখ হাসিনাকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন কংগ্রেস আর বিজিপি এক নয়। যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশে একটি দ্রুত গণতান্ত্রিক সরকার দেখতে চায় তারা। আর ভারত সরকার মনে করছে বাংলাদেশে দ্রুত একটি নির্বাচন হওয়া উচিত। কারণ অন্যান্য দেশের মতো ভারতও বাংলাদেশে অধিকাংশ জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার দেখতে চায়। এরপরই বিশ্বের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের ইন্টারনেট ও টেলিফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় সরকার। এরপর মোবাইল জ্যামার দিয়েও মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেয়া হয়।

তবে শেখ হাসিনার আরেক উপদেষ্টা জানান, মোদী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে বেশ উত্তপ্ত বাক্যে কথা বলেন এবং দ্রুত খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে বিদ্যুত ফিরিয়ে দিতে বলেন। এরপর পরই খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে বিদ্যুত ফিরিয়ে দেয়া হয়। এটাই ছিল খালেদা জিয়ার কাছে শেখ হাসিনার প্রথম পরাজয়। আর পরাজয়ের ফলে ভেঙে পড়েন বিজিবি, র্যা ব ও পুলিশসহ সরকারের সুবিধাভোগী বিভিন্ন ব্যক্তিরা।

বিটিআরসির মাধ্যমে খালেদা জিয়া ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের টেলিফোন কথোপকথনটি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে এসে পৌঁছলে শেখ হাসিনা বেশ ভাবনায় পড়ে যান।

সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআইর এক সিনিয়র অফিসার জানান, শেখ হাসিনা সেনাপ্রধানের কাছ থেকে তিন দফায় সময় চেয়েছিলেন। দুই দফা সময় ইতোমধ্যে শেষ। এখন শেষ দফায় শেখ হাসিনা অপেক্ষা করছেন। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এক গুরুত্বপূর্ণ অফিসারকে মোদী সরকারের নির্দেশনা ইতোমধ্যে পৌঁছে দিয়েছেন। পাশাপাশি জাতিসংঘের বিশেষ চিঠি সেনাবাহিনীর দপ্তরে এসে পৌঁছেছে। বাংলাদেশের বর্তমান অচলাবস্থা নিরসন করতে হাসিনা সরকার ব্যর্থ হওয়ায় সেনাবাহিনীকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে এ চিঠিতে।

ডিজিএফআইর ঐ কর্মকর্তা আরও জানান, ভারতের সবগুলো সীমান্তে রেডএলার্ট জারি করা হয়েছে। যাতে করে সরকারের মন্ত্রীসহ সুবিধাভোগী কেউ পালিয়ে আশ্রয় নিতে ভারতে ঢুকতে না পারে সে বিষয়ে কেন্দ্রিয় সরকারের পক্ষ থেকে বিএসএফকে কঠোর দৃষ্টি রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ভারত ধারণা করছে সরকারের শেষ সময়ে অনেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিতে পারে আর এ কারণেই এ নির্দেশনা দিয়েছে ভারত সরকার।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য জানান, তাদের কাছে গ্রিন সিগন্যাল থাকলেও শেষ কাজটি করতে হবে ২০ দলের নেতাকর্মীদেরই। কারণ রক্তখোকো উন্মাদ শেখ হাসিনার মরণ কামড় থেকে দেশ ও জনগণকে রক্ষায় ২০ দলের নেতাকর্মীদের আরও সজাগ থাকতে হবে। কোনভাবেই আন্দোলন থেকে পিছপা হওয়া যাবে না। সরকার যত কঠোর হবে আন্দোলন তত কঠোরভাবে পালন করতে হবে। কোনভাবেই প্রশাসনের হুমকি ধামকিতে ভয় পেয়ে ঘরে ফেরা যাবে না। একযোগে সরকারকে ধাক্কা দিতে সবশ্রেণির মানুষের রাজপথে নেমে আসা এখন খুবই জরুরি। শুধু বিএনপি- জামায়াতের উপর ভরসা না করে সবপেশার মানুষকে সরকার বিরোধী আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সরকারের মন খারাপের কারণটি জেনে যাওয়ায় বাহিনীগুলোর মধ্যেকার চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়েছে। যারা গুম, খুন, ক্রসফায়ার ও লুটপাটে ব্যস্ত ছিল সেকল আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের মনোবলেও চির ধরেছে।

আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতা শেখ সেলিম, মাহবুবুল আলম হানিফ, মখা আলমগীর, হাসান মাহমুদ, কামরুল ইসলাম, হাসানুল হক ইনু, মাঈনুদ্দিন খান বাদলসহ সরকারের অধিকাংশ মন্ত্রী এমপিরা তাদের পরিবারকে বিদেশে সরিয়ে দিয়েছে। যেকোন সময় অভিযুক্ত মন্ত্রী এমপিরা বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন বলে গোয়েন্দা সংস্থার একটি সূত্র জানিয়েছে।

এদিকে, শেখ হাসিনার সুবিধাভোগী ব্যক্তিরা তার সাথে যোগাযোগ কমিয়ে দেয়ায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বলে আওয়ামীলীগের একটি সূত্র জানায়।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, যারা আইন কানুনের তোয়াক্কা না করে হাসিনার সরকারের নির্দেশ মেনে বিরোধীজোটের উপর নানা অত্যাচার, নির্যাতন করেছে এবং গুম, ক্রসফায়ারসহ নানা অপরাধে জড়িত ছিল সেসকল সদস্যরা সরকারের শেখ সময়ে এসে বাঁচার পথ খুঁজতে বারবার সিনিয়র কর্মকর্তাদের কাছে ধরণা দিলে বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা শেখ হাসিনার কাছে পেশ করেন। শেখ হাসিনা উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ধমক দিয়ে বলেন এই ৬ বছরে বহুত কামিয়েছেন। দেশে বিদেশে নামে বেনামে বহু অর্থ জমা করেছেন। সরকারের শেষ সময়ে এসে আমাকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করবেন না। যা নির্দেশ রয়েছে আপনাদের উপর তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করুন।

এদিকে র্যা ব ও পুলিশের মহাপরিচালকরা মিডিয়ার সামনে গলাবাজি করলেও তাদের ডাকে জনগণ কোন সাড়া দেয়নি। এ পর্যন্ত জজমিয়া কাহিনী ছাড়া আন্দোলনকারীদের পুরস্কারের লোভে একজনকেও ধরিয়ে দেয়নি জনগণ।

সরকারের পুরস্কার নাটকটি ফ্লপ হওয়ায় আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর মনোবলও ভেঙে পড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর ভিতরে বসে থাকা একটি গ্রুপ ২০দলের আনুকুল্য পেতে দোষী ও অতিউতসাহী পুলিশ ও র্যা বের তালিকা বিএনপি-জামায়াতের হাতে তুলে দিয়েছে।

তারেক রহমানের এক উপদেষ্টা জানান, সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ না ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন তারেক রহমান। আগের চেয়ে আরও বেশি কঠোরভাবে আন্দোলন গড়ে তুলতে রাজধানী থেকে শুরু করে জেলা পর্যায়ের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন এখন কোনভাবেই মাঠ ছেড়ে দিলে বিজয় হাত ছাড়া হয়ে যাবার আশঙ্কা রয়েছে। সকল দ্বিধা ভুলে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান তারেক রহমান।