বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারে জাতিসংঘের বাধা
বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারে
জাতিসংঘের বাধা
muktobak24: ঢাকা, সোমবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০১৫
|
বাংলাদেশে
বিএনপি এবং ২০ দলীয়
জোটের আহবানে গত ৫
জানুয়ারি থেকে টানা অবরোধ
চলছে। সেই
অবরোধে সারা বাংলাদেশে সহিংস
রূপ ধারণ করেছে।
বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের
অবরোধ এবং হরতালে অংশগ্রহণকারীদের
দমনে সরকার কঠোর অবস্থান
নিয়েছে। পুলিশ,
র্যাবের পাশাপাশি সারা
বাংলাদেশের অধিকাংশ জেলায় বিজিবি নিয়োগ
করা হয়েছে। চলছে
যৌথবাহিনীর অভিযান। তারপরেও
আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। সেই
সাথে বিএনপির চেয়াপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে
গ্রেফতারের জন্য জাতীয় সংসদের
সংসদ্যরা জোরালো দাবি তুলেছেন।
একটি সূত্র জানায়, বাংলাদেশের
বর্তমান পরিস্থিতি জাতিসংঘের নজরে রয়েছে।
তারা বাংলাদেশের সহিংস পরিস্থিতি নিয়ে
জাতিসংঘ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সূত্র
নিশ্চিত করেছে যে, জাতিসংঘের
চাপের কারণেই বিএনপির চেয়ারপার্সন
এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম
খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করা
হচ্ছে না। সরকার
মনে করে বেগম খালেদা
জিয়াকে গ্রেফতার করলেই বিরোধী দলের
আন্দোলন দমানো যাবে।
সেই জন্য সরকার বেগম
খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করতে
চেয়েছিলো কিন্তু জাতিসংঘের চাপের
কারণেই অধ্যাবধি বেগম খালেদা জিয়াকে
গ্রেফতার করা হচ্ছে না।
বাংলাদেশের
পরিস্থিতি যদি শান্ত না
হয় এবং সরকার বিরোধী
দল দমনে সেনা বাহিনী,
র্যাবকে ব্যবহার করে
এবং এটা প্রমাণিত হয়
যে বাংলাদেশ সেনা বাহিনী আন্তর্জাতিক
আইন অমান্য করে মানবাধিকার
লংঘন করছে সেক্ষেত্রে আগামীতে
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীতে বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর অংশগ্রহণ
প্রশ্নের সম্মুখীন হবে।
নিউইয়র্ক
থেকে এনা জানায়, ২২
জানুয়ারি বিকেলে জাতিসংঘের প্রতিদিনের
প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। সেই
প্রেস ব্রিফিং এর জাতিসংঘের মহাসচিব
বান কি মুনের পক্ষে
তার স্পোকম্যান স্টিফেন ডোজারিক সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
সেই প্রেস ব্রিফিং এ
বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পরিস্থিতি নিয়ে
সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন।
সাংবাদিক লি বাংলাদেশের বিষয়
নিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিবের মহাসচিব বান কি মুনের
দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রশ্ন
করলে স্টিফেন ডোজারিক বান কি মুনের
সে সব প্রশ্নের উত্তর
প্রদান করেন।
সাংবাদিক
মিস্টার লি’র বলেন,
আমি বাংলাদেশ বিষয়ে আপনাকে প্রশ্ন
করতে চাই। সেখানে
রাজনৈতিক দ্বন্দ¦ এবং সংঘাত বৃহৎ
আকার ধারণ করেছে, কয়েক
ডজন মানুষ নিহত হয়েছে। সাবেক
প্রধানমন্ত্রীকে (বেগম খালেদা জিয়া)
গ্রেফতারের দাবি উঠেছে এবং
গণমাধ্যমে কিছু সেন্সরশীপও চলছে। আমি
বিস্মিত, আমি জানি সেক্রেটারি
জেনারেল আগে এ বিষয়ে
কথা বলেছেন এবং আমি
বিশ্বাস করি একই ভাবে
কিছু কথা বলার চেষ্টা
করেছেন। দেশটি
একই সাথে শান্তিরক্ষা মিশনে
বৃহৎ অবদান রাখছে।
ডিপার্টমেন্টাল অব পলিটিক্যাল এ্যাফেয়ার্স-ডিপিএ অথবা সেক্রেটারি
জেনারেল কি করছেন?
সাংবাদিক
লি’র প্রশ্নের জবাবে
স্পোকসম্যান স্টিফেন ডোজারিক বলেন, আমি মনে
করি, আমরা আমাদের উদ্বেগ
প্রকাশ করেছি , যা হিউম্যান রাইটস
এর হাই কমিশনারের কার্যালয়
থেকে পরিস্কার করে বলা হয়েছে,
যাতে শান্তির আহবান জানানো হয়েছে। এবং
একই সাথে সরকারের নিশ্চিত
করা উচিৎ যে, শীর্ষ
বিরোধী নেতাকে কোন ধরনের
গ্রেফতার ও ডিটেনশন আইনের
ইচ্ছা অনুযায়ী প্রয়োগের মাধ্যমে নয় এবং সব
পদক্ষেপ নেয়া হবে আইন-কানুন অনুযায়ী এবং
‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন’ নির্ধারিত সূচক
অনুয়ায়ী পরিচালনা করা হবে।
অবশ্যই আপনি জানেন, আমি
মনে করি, বাংলাদেশে এখন
যে অবস্থা আমরা
দেখছি বা দেখতে হচ্ছে
বস্তুত তা বিরক্তিকর।
সাংবাদিক
লি’র দ্বিতীয় প্রশ্ন
ছিলো এবার আমি একটি
নির্দিষ্ট বিষয়ে প্রশ্ন করতে
চাই, আর সেটি হলো-
আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ বর্তমানে
শান্তিরক্ষা মিশনে অবদান রাখা
এক নম্বর দেশ এবং
কিছু অপব্যবহার সিকিউরিটি ফোর্স এর পদতলকে
বেশ খানিকটা শায়িত করেছে, এটা
কি ইউএন’র সৈন্যশ্রেণীর
বিস্তারের পুনর্মূল্যায়ণে কোন ভূমিকা রাখবে?
এই প্রশ্নের উত্তরে স্পোকসম্যান স্টিফেন
ডোজারিক বলেন, আমি মনে
করি ‘দ্যা স্টানডার্ড হিউম্যান
রাইটস স্ক্রীনিং পলিসি’ ক্রমাগত প্রয়োগ
হবে।বাংলাদেশ
বিষয়ে প্রেস ব্রিফিং এর
ট্যানিক্যাল উত্তর নিয়ে জাতিসংঘের
একজন শীর্ষ কর্মকর্তার দৃষ্টি
আকর্ষণ করা হলে তিনি
এনাকে বলেন, প্রথম প্রশ্নের
উত্তর বিশ্লেষণ করলে তার অর্থ
দাঁড়ায়- বাংলাদেশে বিএনপির চেয়ারর্পাসনকে সরকার ইচ্ছে করলেই
গ্রেফতার করতে পারে না। মূলত:
জাতিসংঘের চাপের কারণেই সরকার
বেগম খালেদা জিয়াকে এখনো
পর্যন্ত গ্রেফতার করেনি বা গ্রেফতার
করার সাহস পাচ্ছে না। জাতিসংঘের
চাপ না থাকলে সরকার
আরো আগে বেগম খালেদা
জিয়াকে গ্রেফতার করতো। তিনি
আরো বলেন, বিএনপির চেয়ারপার্সন
এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম
খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করলে
সরকার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লংঘনের দায়ে
অভিযুক্ত হতে পারে।
আফ্রিকার কিছু দেশে এই
ধরনের নজির রয়েছে।
তিনি বলেন, যে কারণেই
সরকার বেগম খালেদা জিয়ার
উপর চাপ সৃষ্টি করার
জন্য বিভিন্ন ধরনের মামলা দিচ্ছে। দ্বিতীয়
প্রশ্নের জবাবের ব্যাপারে তিনি
বলেন, বাংলাদেশ সেনা বাহিনী আন্তর্জাতিক
মানবাধিকার আইন অমান্য করে
বাংলাদেশে মানবাধিকার লংঘন করছে কি
না তা জাতিসংঘ গভীরভাবে
মনিটরিং করছে এবং মনিটরিং
এ যদি প্রমাণিত হয়
বাংলাদেশ সেনা বাহিনী বাংলাদেশে
মানবাধিকার লংঘন করছে তাহলে
আগামীতে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষী মিশনের
বাংলাদেশের সৈন্য নিয়োগ নিয়ে
প্রশ্নের সম্মুখীন হতে পারে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,
জাতিসংঘের প্রতিদিনের প্রেস ব্রিফিং এ
বাংলাদেশের বিষয়টি শুধু শুধু
এসেছে এটা ভাবার কোন
কারণ নেই। তাছাড়া
স্পোকসপার্সন স্টিফেন ডোজারিক জাতিসংঘের মহা সচিব বান
কি মুনের কথাগুলোই বলেছেন।
Comments
Post a Comment