বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে নতুন রাজনীতি?
বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে নতুন রাজনীতি? |
তথ্য সুত্র : http://www.dw.de
Muktobak24 : Friday, 27 February 2015
বিএনপিনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর দেশের পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে, তা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে কৌতূহল৷ ওদিকে এই ঘটনায় জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুন অত্যন্ত উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছেন তাঁর মুখপাত্র৷
বাংলাদেশের
একটি বিশেষ আদালত বুধবার
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া
অর্ফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল
ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
জারি করে৷ ঢাকা মহানগর
পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল
ইসলাম বৃহস্পতিবার দুপুরে ডয়চে ভেলেকে
জানান, ‘‘গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থানায় পৌঁছালে আমরা
পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেব৷''
তিনি জানান, ‘‘এখনও পর্যন্ত থানায়
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পৌঁছায়নি, অথচ বুধবারই আদালতের
কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন যে, তাঁরা থানায়
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পৌঁছে দিয়েছেন৷''
এদিকে
বুধবার রাতেই খালেদা জিয়ার
আইনজীবীরা সাবেক বিচারপতি টিএইচ
খানের বাসায় বৈঠকে বসেন৷
সে সময় গোটা বাড়িটা
ব়্যাব-পুলিশ বাইরে থেকে
ঘিরে রাখলেও কাউকে আটক
করেনি৷
খালেদা
জিয়ার প্রেস উইং-এর
কর্মকর্তা শাইরুল কবির খান
ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘খালেদা
জিয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে বিচলিত নন৷
তিনি আন্দোলন চালিয়ে যেতে অনড়
এবং অবিচল আছেন৷ তাছাড়া
তিনি গ্রেপ্তার হলে আন্দোলন কীভাবে
চলবে – তারও পরিকল্পনা করা
আছে৷''
বিএনপি
নেতাদের মধ্যে অবশ্য একটা
অন্য ভয় কাজ করছে৷
তাঁদের সবচেয়ে বড় আতঙ্ক
হলো খালেদা জিয়া আদালতে
গেলে তাঁকে যদি আর
গুলশানের কার্যালয়ে ফিরে আসতে না
দেয়া হয়৷ তাহলে কী
হবে? এই একই কারণে
খালেদা জিয়া একুশে ফেব্রুয়ারি
শহীদ মিনারে যাননি৷''
তবে
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ
উদ্দিন আহমেদ অজ্ঞাত স্থান
থেকে বৃহস্পতিবার দেয়া এক বিবৃতিতে
বলেন, ‘‘দেশবাসীর আশা, সরকারের শুভবুদ্ধির
উদয় হবে এবং গণদাবি
মেনে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী দ্রুত
পদত্যাগ করে দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনবেন এবং
এই ভয়াবহ সংকট থেকে
জাতিকে রক্ষা করবেন৷ আর
সরকার তা করতে অস্বীকৃতি
জানালে, অর্থাত্ গণদাবি মেনে না
নিয়ে অনড় অবস্থানে থাকলে
আমরা আবারও ১ মার্চ
রবিবার থেকে দেশব্যাপী হরতালসহ
কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো৷''
ওদিকে
জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুনের
মুখপাত্র স্টেফান দুয়ারিচ নিউ ইয়র্কে বুধবারের
নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে জানান,
‘‘বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী
বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে নজর
রাখছে জাতিসংঘ৷''
বিএনপি
চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে তাঁর
গুলশান কার্যালয়ে আটকে রেখেছে পুলিশ৷
যদিও সরকারের তরফ থেকে বলা
হচ্ছে তাঁর নিরাপত্তা বাড়ানো
হয়েছে, তবে সোমবার তিনি
বাইরে যেতে চাইলে পুলিশ
তাঁর গেটে তালা লাগিয়ে
দেয়৷ ফলে অবরুদ্ধ খালেদা
জিয়া সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন
গেটের মধ্যেই৷
তাঁর
কথায়, ‘‘বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি ও
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি
পরোয়ানা জারির বিষয়টি নিয়ে
সত্যিই উদ্বিগ্ন জাতিসংঘের মহসচিব বান কি-মুন৷ তাই এ
অবস্থার শান্তিপূর্ণ সমাধানে রাজনৈতিক নেতাদের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি৷''
৫০
দিন ধরে নিজ কার্যালয়ে
খালেদা জিয়ার ‘অবরুদ্ধ' থাকা,
তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি এবং জাতিসংঘসহ
উন্নয়নে অংশীদার দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের চলমান
আলোচনা – এ বিষয়গুলি সম্পর্কে
দুয়ারিচের মতামত জানতে চান
উপস্থিত এক সাংবাদিক৷ জবাবে
দুয়ারিচ বলেন, ‘‘আমি এ অবস্থা
সম্পর্কে অবহিত৷ আমি প্রশ্ন
শুনতে চাই৷''
এরপর
ঐ সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ‘‘তারা
(বাংলাদেশ সরকার) বলেছে যে,
তারা পশ্চিমা দেশ বা জাতিসংঘের
কোনো হস্তক্ষেপ সহ্য করবে না৷
এ অবস্থায় জাতিসংঘের অবস্থান কী?''
উত্তরে
দুয়ারিচ বলেন, ‘‘আমরা বিএনপি নেতার
(খালেদা) বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির ব্যাপারে সজাগ
রয়েছি৷ মহাসচিব এ ব্যাপারে উদ্বিগ্ন৷
আমরা বাংলাদেশে চলমান উত্তেজনা, সহিংসতা
ও রাজনৈতিক সহিংসতার বিষয়েও খবর রাখছি৷
এ অবস্থায় মহাসচিব আবারও বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা
ও উন্নয়ন বজায় রাখতে
শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথে আসার জন্য
সব রাজনৈতিক নেতাদের আহ্বান জানিয়েছেন৷''
Comments
Post a Comment