জমজ দুই ভাইকে ছিনতাইকারী বানানোর চেষ্টা : পুলিশের অমানবিক নির্যাতন
শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৪
muktobak24: রাজশাহীর মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় জমজ দুই ভাইকে নগ্ন করে অমানবিক নির্যাতনে করে ছিনতাইকারী বানানোর চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। পরে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত থেকে জামিন নিয়ে তারা এখন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর ফলে শারীরিকভাবে আহত হওয়ার পাশাপাশি আহতরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন।আহতরা হলেন, রাজেদুল হাসান রাজ (২৬) ও তার ভাই শহিদুল হাসান শাহী (২৬)। আহতরা মহানগরীর সাধুর মোড় এলাকার মর্ত্তুজা আলীল ছেলে। গত ১ ডিসেম্বর ২০১৪ সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বোয়ালিয়া মডেল থানায় নির্যাতনের এ ঘটনা ঘটে।
নির্যাতনের শিকার দুই ভাই জানান, তারা নর্দান ইউনিভার্সিটির রাজশাহী শাখায় আইন বিষয়ে ৬ষ্ঠ সেমিস্টারে অধ্যয়নরত। ইউনির্ভসিটির পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলে তারা থানায় জিডি করতে যান। সে সময় কর্মরত ডিউটি অফিসার তাদের থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই মনিরের কাছে পাঠায়। তারা এসআই মনিরের মনিরের সঙ্গে দেখা করতে যায়। এসময় তার কক্ষে ঢুকে জিডির বিষয়টি অবহিত করেন। কিন্তু এসআই মনির জিডির বিষয়টি সম্পর্কে কোনো কথা জিজ্ঞাসা করার আগেই তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন।
এক পর্যায়ে তাদের হাতে হাতকড়া পরিয়ে দেয়া হয়। এসময় এসআই আমিরুলসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা তাদের উলঙ্গ করে মুখে কালো কাপড় পরিয়ে হাত-পা বেধেঁ সম্পূর্ন নগ্ন করে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে দেয়। এরপর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) খাইরুল ইসলাম তাদের হকিস্টিক ও জিআই পাইপ দিয়ে বেধড়ক পেটায়। এসময় তিনি তাদের জোর করে স¤প্রতি মহানগরীর দেবিশিংপাড়ায় ঘটে যাওয়া ছিনতাইয়ের ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার ব্যাপারে স্বীকারোাক্তি আদায়ের চেষ্টা করা হয়।
নির্যাতনের শিকার দুই ভাই আরো জানান, স্বীকারোক্তি না দেওয়ায় তাদের ওপরে নেমে আসে আরো অমানবিক নির্যাতন। এরপর তাদের কয়েক দফায় থানার দোতালার একটি কক্ষে রেখে নির্যাতন করা হয়। এক সময়ে তাদের মুখের কালো কাপড় খুলে দেয়া হলে, তারা এসআই মনির, এসআই আমিরুল ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) খাইরুল ইসলামসহ কয়েকজনকে সনাক্ত করেন। পরে তাদের সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় কয়েক ঘণ্টা থানার একটি অন্ধকার কক্ষে রাখা হয়। পরে গভীর রাতে আবারো তাদের ওপর চালানো হয় পুলিশি নির্যাতন। নির্যাতন শেষে তাদের নগ্ন করে থানার দোতালার একটি কক্ষে সারারাত আটকিয়ে রাখা হয়।
নির্যাতনের শিকার শাহী জানান, নির্যাতনের একপর্যায়ে গলা শুকিয়ে গেলে পানি খেতে চাইলে। এসআই মনির লাইট বন্ধ করে দেয় এবং বলে হা কর। মুখ হা করলে তার মুখে প্রশাব করে দেয়। এতে সে সেখানেই বমন করে জ্ঞ্যান হারিয়ে ফেলে।
পরে মঙ্গলবার সকালে তাদের অপর একটি ছিনতাই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে চালান দেয়া হয়। এরপর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ক আদালতের বিচারক তাদের জামিন মঞ্জুর করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার নির্দেশ দেয়। পরে তারা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ভর্তি হন।
Comments
Post a Comment