গুমের বার্ষিকী! আমার বাবাকে এনে দাও


ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর২০১৪
muktobak24: ‘আমার বাবাকে এনে দাও। আমার বাবাকে ফেরত চাই। আমাদের চোখ দিয়ে এখন আর পানি আসে না। এক বছর ধরে শুধু কান্না করছি কিছুই হচ্ছে না। আমাদের কথা কেউ শোনে না।’
‘আমার ছেলেকে না পেলে আমি আর বাঁচবো না।’ ‘আমার ভাইয়ের চেহারাটা আমাদেরকে একবার দেখাও। ভাইয়ের দুইটি অবুঝ সন্তান কান্না কান্না করতে করতে পাগল হয়ে যাচ্ছে। ভাইকে ছাড়া আমরা আর বাঁচতে পারবো না।’
‘প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের অনুরোধ, আপনি আমাদের স্বজনদের ফিরিয়ে দিন। দেশবাসী আমাদের পাশে এসে দাঁড়ান। অন্যথায় আমরা বাঁচতে পারবো না।’
বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে গুম হওয়া লোকদের স্বজনদের সংবাদ সম্মেলন এমনই এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যে পরিণত হয়েছিল।
বাবা হারা সন্তান, ছেলে হারা মা আর ভাই হারা বোনের বুকফাটা কান্না আর আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছিল পরিবেশ। সংবাদ সম্মেলনে আগত অতিথি-দর্শকরাও চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। চোখের কোনে অশ্রু টলমল করেছিল গণমাধ্যমকর্মীদেরও।
২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় দিয়ে সাজেদুল ইসলাম সুমন, জাহিদুল করিম তানভীর, আব্দুল কাদের ভুইয়া মাসুম, মাজহারুল ইসলাম রাসেল, আসাদুজ্জমান রানা, আল-আমিন, এ এম আদনান চৌধুরী ও কাওসার আহমেদ নামে ৮ জনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
বিগত এক বছর গুম হওয়াদের স্বজনরা প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে অনেক ঘুরেও তাদের কোন সন্ধান আজ পর্যন্ত পাননি।
গুম হওয়ার প্রথম বার্ষিকীতে স্বজনরা বৃহস্পতিবার আপনজনদের সন্ধানের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সম্মেলনে গুম হওয়াদের স্বজন ছাড়াও বিশিষ্টজনরা উপস্থিত ছিলেন।
গুম হওয়া সাজেদুল ইসলাম সুমনের ৪ বছরের অবুঝ সন্তান আরোয়া বারবার বলছিল আমার বাবাকে এনে দাও। আমার বাবাকে এনে দাও। সুমনের ৮ বছরের কন্যা সন্তান রাইয়াতেরও একই আকুতি আমার বাবাকে ফেরত চাই, আমার বাবাকে এনে দাও।
কাওসার, আদনান ও তানভীরের মা ছিল বাকরুদ্ধ। তারা শুধুই কাঁদলেন। ছেলে হারানোর কষ্ট তাদের বুকে এতটাই জমেছিল যে কান্না ছাড়া আর কোন কথা বলতে পারেননি।

Comments

Social Share Icons

Popular Posts

শীঘ্রই বাংলাদেশও আমাদের হবেঃ পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ

বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন নিয়ে নিউজটি ভুয়া ছিল স্বীকার করতে বাধ্য হলো ডেইলি স্টার

“শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে আজ বড় বেশি মনে পড়ে” - তরিকুল ইসলাম (সাবেক মন্ত্রী)